১০ বছর আগে কেউ যদি বলতো, "আমি মুখে যা বলবো, সেটার উপরেই একটা ছবি জেনারেট হয়ে যাবে।" মানুষ শুনে বলতো, "এটা তো পুরোপুরি ম্যাজিক!" কিন্তু সেই ম্যাজিক আমরা প্রতিদিন ব্যবহার করছি। অথবা আমরা কল্পনাও করিনি ২০২৫ সালে হিউম্যান ল্যংগুয়েজের মাধ্যমে প্রোগ্রামিং করা যাবে। ঠিক তেমনি ১০ বছর পরের পৃথিবী নিয়েও আপনাকে যদি কিছু বলি, আপনি সেটাকে অসম্ভব, অবাস্তব বা ম্যাজিক বলবেন। কিন্তু সেই সময় চলে আসলে আপনি সেটার ইউজার হয়ে উঠবেন। চলুন কিছু বিষয় প্রেডিকশন দেই যাতে আপনারা আমাকে বর্তমান সময়ে পাগল বলবেন ঠিক যেমন ছবি জেনারেট করার কথা বললে ২০১০ সালের মানুষকে পাগল বলা হতো। সো ১০ বছর পর কেমন হবে সবকিছু? এই যে আমি আমার ফোনে কষ্ট করে টাইপ করে পোস্ট টা লিখছি, আজ থেকে ১০ বছর পরে কিবোর্ড বা মাউস নয়, আমরা শুধু চিন্তা করেই কম্পিউটার বা মেশিন কন্ট্রোল করতে পারবো। চিন্তাগুলো সরাসরি স্ক্রিনে লেখা হয়ে যাবে বা ডিভাইস কাজ করা শুরু করবে। আপনার চিন্তাই হবে সেই যুগের কীবোর্ড মাউস। AI পার্সোনালিটি এত বেশি বাস্তব হয়ে উঠবে যে আসল মানুষ আর AI-এর মধ্যে পার্থক্য করা কঠিন হয়ে যাবে। আপনি বুঝতেই পারবেন না আপনি কার সাথে কথা বলছেন। হয়তো কাস্টোমার কেয়ারে কথা বলা শেষে জানতে পারলেন সেটা কোনো মানুষ ছিলোনা। বর্তমানেও কিছু এআই গায়ক পপুলার হয়েছে, যাদের মানুষ শুরুতে ভাবতেই পারেনি তারা এআই, অথবা এখনকার এআই জেনারেটেড ছবি বা ভিডিও দেখেও আমরা সাধারণ মানুষ বুঝতে পারিনা এটা বাস্তব কিনা। কিছু ইন্সটাগ্রাম সেলিব্রেটিও আছে, যাদের বাস্তবে কোনো অস্তিত্ব নেই। কিন্তু মানুষ বুঝতেই পারেনা তারা এআই। এবার আরো ভয়ংকর দিকে যাই। সন্তান জন্মের আগেই তার জেনেটিক কোড এডিট করে বিভিন্ন রোগবালাইয়ের ঝুঁকি দূর করা বা নির্দিষ্ট শারীরিক বৈশিষ্ট্য ঠিক করে দেওয়া সম্ভব হতে পারে। যেমন আপনি আপনার পছন্দমতো বাচ্চা তৈরি করতে পারবেন। তার চোখের রঙ, গায়ের রঙ সব নিজের মতো কাস্টোমাইজ করতে পারবেন। তখন আর কেউ কালা বলে গালি দিবেনা। কারণ সেটা তার চয়েস হিসেবে সম্মান দেখানো হবে। VR এবং AR এত উন্নত হবে যে মানুষ তার দৈনন্দিন জীবনের বেশিরভাগ কাজ, যেমন অফিস, মিটিং বা সামাজিকতা, বাস্তব জগতের বদলে ভার্চুয়াল জগতেই সারতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে। ভার্চুয়াল জগতটা পৃথিবীর চেয়ে বেশি চাকচিক্যময় হবে। এখন অ্যাপেল ভিশন প্রো কিংবা স্যামসাং এক্সআর এর বিজ্ঞাপনগুলো দেখে আমাদের সেই শুরুর দিকের এন্ড্রোয়েড ফোনের বিজ্ঞাপনের কথা মনে পড়ছে। ফোনগুলো সবার কাছে এফোর্ডেবল ছিলনা আজকের মত। তেমনি স্মার্টফোনের চেয়েও ৩/৪ গুণ কম দামে পাওয়া যাবে এসব ভিআর এআর। আমরা চোখে চশমা হিসেবে অথবা মাথায় হেলমেট হিসেবে পরবো। মার্ক জাকারবার্গ অলরেডি বলেছেন, ভবিষ্যতের যুগ হবে গ্লাসের যুগ। আমরা পশুপাখির ভাষা বুঝতে সক্ষম হবো। গাছের সাথে কথা বলতে পারবো। গাছ কথা বলবে এরকম বিষয় আমরা হাদিসেও দেখতে পাই। অনেক কিছুই আমি ভিশন দেখি। কিন্তু পাবলিকলি সব কথা বলাও যায়না। যেমন এইটুকু লেখাতেও অনেকে পড়ার পর রাগ করবেন। কিন্তু সূর্যের চারিদিকে পৃথিবী ঘোরে বলার কারণে মৃত্যুদন্ড দেয়ার ইতিহাস শুনলে আমাদের অবাক লাগে, তাইনা? তাই আপনারা এগুলো প্রেডিকশন শুনে কেমন রিয়েক্ট করছেন, এগুলো যদি লিপিবদ্ধ থাকতো, তাহলেও ভবিষ্যতের মানুষ সেগুলো শুনে হাসাহাসি করতো। আচ্ছা, লেখাটা অনেক বড় হচ্ছে, কিন্তু শেষে একটা বিষয় বলতে মন চাইলো। তা হলো হসপিটালের চাহিদা অনেক কমে যাবে। বাসায় বসেই রোগ নির্ণয়, রোগ সারানোর ডিভাইস চলে আসবে। বলতে গেলে সবাই ডাক্তার হয়ে যাবে, এখন যেমন সবাই প্রোগ্রামার হওয়ার পথে।
