সেলফ হেল্প ডোপামিন ট্র্যাপ

 

সেলফ-হেল্প কনটেন্টগুলো হচ্ছে আসলে ডিজিটাল ফাস্ট ফুড। দেখতে দারুণ, খেতেও ভালো লাগে, কিন্তু পুষ্টির নামে কিছুই থাকে না। এগুলো তোমাকে একটা মুহূর্তের জন্য দারুণ ফিলিংস দেবে, কিন্তু আসল সমস্যাটা যে জায়গার, সেখানেই থেকে যাবে।


এই পুরো সিস্টেমটা কাজ করে ডোপামিন হ্যাক করে। ধরো, তুমি একটা ইন্সটাগ্রাম রিল দেখছ যেখানে বলছে, "৫টা হ্যাবিট যা তোমার জীবন বদলে দেবে।" তুমি রিলটা দেখে ভাবলে, "আরে, এটা তো দারুণ কথা!" আর তোমার মস্তিষ্কে একটা ডোপামিনের ঢেউ বয়ে গেল। এই ডোপামিনটা আসে নতুন কোনো 'জ্ঞান' বা 'আবিষ্কারের' আনন্দ থেকে। এটা একটা ভার্চুয়াল প্রোগ্রেস, কিন্তু বাস্তবে তোমার জীবনে কিছুই বদলায়নি।


আর এই ডোপামিনটাই হচ্ছে আসল নেশা। তুমি যত বেশি এই ধরনের কনটেন্ট দেখবে, তোমার মস্তিষ্ক তত বেশি ডোপামিন চাইবে। তুমি একটা রিল দেখলে, তারপর আরেকটা, তারপর আরেকটা। এটা একটা চক্রের মতো- তুমি দেখছ, ভালো লাগছে, কিন্তু কিছুই করছ না। তোমার মন বলছে, "আমি তো শিখছি, আমি তো নিজেকে উন্নত করছি," কিন্তু আসলে তুমি শুধু কনটেন্টের ভোক্তা হয়ে যাচ্ছ।


এইসব কনটেন্টের সমস্যা হচ্ছে, এরা তোমাকে শুধু 'কী করতে হবে' সেটা বলে, কিন্তু 'কীভাবে করতে হবে' বা 'কীভাবে বাধাগুলো পেরিয়ে যেতে হবে' সেটা বলে না। তারা তোমাকে একটা মিষ্টি স্বপ্ন দেখায়, আর তুমি সেই স্বপ্নের পেছনে ছুটতে গিয়ে জীবনটাকে একটা চক্রে আটকে ফেলো। আসল কাজটা তো করতে হয় কষ্ট করে, ধাপে ধাপে, আর সেখানে কোনো ইনস্ট্যান্ট ডোপামিন নেই।


এরা তোমাকে একটা সুন্দর গোলকধাঁধায় আটকে ফেলে যেখানে তুমি মনে করো তুমি সামনের দিকে এগোচ্ছ, কিন্তু আসলে তুমি একই জায়গায় ঘুরপাক খাচ্ছ। এই ফাঁদ থেকে বের হতে হলে তোমাকে দেখতে হবে, তুমি কনটেন্ট দেখছ নাকি কাজ করছ? ডোপামিনের শর্টকাটটা বাদ দিয়ে কঠিন পথটা বেছে নাও। এটাই একমাত্র উপায়।

Previous Post Next Post