আমাদের দুনিয়াটা বাস্তবতার চেয়ে ধারণার উপর বেশি চলে।
আপনি আসলে কেমন, আপনার ভেতর কী আছে, সেটা মানুষ খুঁজতে যাবে না। তারা সেটাই বিশ্বাস করবে, যা তারা দেখবে। এখানেই আসল খেলা! আপনি যদি নিজেকে শক্তিশালী হিসেবে তুলে ধরেন, পৃথিবী আপনাকে শক্তিশালী হিসেবেই দেখবে। আর যদি একবারও আপনার মধ্যে দুর্বলতার ছাপ দেখে ফেলে, তবে সেই দুর্বলতার সুযোগ নিতে এক মুহূর্তও দেরি করবে না।
ক্ষমতা অর্জন করাটা একটা পারফরম্যান্সের মতো। এটা শুধু অর্জন করলেই হয় না, প্রতিনিয়ত অভিনয় করে যেতে হয়। আপনার হাঁটাচলা, কথাবার্তা, চোখের চাউনি- সবকিছুতেই থাকতে হবে একটা ক্ষমতার ছাপ। হয়তো শুরুতে আপনার ভেতর সেই আত্মবিশ্বাসটা নেই, কিন্তু আপনি যদি আত্মবিশ্বাসের অভিনয়টা নিখুঁতভাবে করতে পারেন, তাহলে দেখবেন একটা সময় সেই অভিনয়টাই আপনার বাস্তবতায় পরিণত হয়েছে। ইতিহাসেও এর বহু প্রমাণ আছে। জুলিয়াস সিজার থেকে শুরু করে নেপোলিয়ন- তাঁরা সবাই নিজেদের এমনভাবে উপস্থাপন করতেন, যেন তাঁরা জন্মেছেনই শাসন করার জন্য। তাঁদের এই অটুট আত্মবিশ্বাসই সাধারণ মানুষকে তাঁদের অনুসরণ করতে বাধ্য করত।
এই ক্ষমতার লড়াইয়ে আপনার সবচেয়ে বড় অস্ত্র হলো আপনার আত্মবিশ্বাস। মানুষ সবসময় তাকেই অনুসরণ করে, যার মধ্যে কোনো দ্বিধা নেই, যে নিজের সিদ্ধান্তের উপর অটল। মজার ব্যাপার হলো, একজন দ্বিধাগ্রস্ত সঠিক মানুষের চেয়ে একজন প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসী ভুল মানুষও অনেক সময় বেশি প্রভাবশালী হয়। আপনার আত্মবিশ্বাস যখন আকাশছোঁয়া থাকে, তখন আপনার ছোটখাটো ভুলগুলোও মানুষ ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখে। তারা আপনার উপর এতটাই বিশ্বাস করতে শুরু করে যে, আপনার ভুলগুলোও তাদের কাছে সঠিক বলে মনে হয়।
পৃথিবী আপনাকে নিয়ে কী ভাববে, সেই সিদ্ধান্তটা পৃথিবীর হাতে ছেড়ে দেবেন না। নিজের গল্পটা নিজেই তৈরি করুন। আপনার কোন গুণগুলো মানুষকে দেখানো দরকার আর কোনগুলো দেখানো যাবে না, সেই সিদ্ধান্ত আপনাকেই নিতে হবে। নিজের একটা শক্তিশালী ইমেজ তৈরি করুন এবং বারবার সেটা মানুষের সামনে তুলে ধরুন, যতক্ষণ না পর্যন্ত সেই ইমেজটা তাদের মনে গেঁথে যায়।
আপনাকে সেরা হওয়ার জন্য অপেক্ষা করলে চলবে না। আপনাকে এমনভাবে আচরণ করতে হবে, যেন আপনিই সেরা। কারণ, যতক্ষণ না আপনি নিজে এটা বিশ্বাস করছেন, অন্য কেউ করবে না। নিজের মূল্য ঘোষণা করুন, স্বীকৃতির জন্য অপেক্ষা করবেন না। যখন আপনার প্রতিটি পদক্ষেপে থাকবে ক্ষমতার ছাপ, তখন দেখবেন, পৃথিবী আপনার জন্যই পথ ছেড়ে দিচ্ছে।
