বহু পঠন-পাঠন এবং অগণিত কর্মশালায় অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা আমার রয়েছে। স্ব-উন্নয়নমূলক গ্রন্থ থেকে শুরু করে ব্যবসায়িক কৌশল পর্যন্ত, প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমি নিজেকে সমর্পণ করেছি। কিন্তু ফলাফল প্রায়শই শূন্য থেকেছে। ভ্রান্ত ধারণায় আমরা অনেকেই মনে করি যে, শুধুমাত্র তথ্য আহরণের মাধ্যমেই ব্যক্তিগত বা পেশাগত উন্নয়ন সম্ভব। বস্তুত, আমাদের মস্তি
ষ্ক জ্ঞানে পরিপূর্ণ থাকলেও কর্মক্ষেত্রে তার প্রতিফলন অপ্রতুল। কেন এই অসামঞ্জস্য? কেন আমরা জ্ঞাত হয়েও তা কার্যে পরিণত করতে ব্যর্থ হই?
আপনার জীবনের লক্ষ্য হলো একটি উঁচু পর্বতের চূড়ায় পৌঁছানো। কিন্তু বাস্তবে আমরা কী করি? একটি পথ ধরে সামান্য অগ্রসর হওয়ার পর আমরা যখন ভিন্ন একটি পথের সন্ধান পাই, যা আপাতদৃষ্টিতে অধিকতর সহজ মনে হয়, তখনই পূর্বের পথ পরিহার করে নতুন পথে যাত্রা শুরু করি। এই প্রবণতা কি কাঙ্ক্ষিত ফল বয়ে আনে? উত্তর unequivocally, না। এটি কখনোই চূড়ায় পৌঁছানোর পথ হতে পারে না।
আপনার নির্বাচিত পথটিকে নিখুঁত হওয়ার প্রয়োজন নেই। বরং, যে পথটি আপনি বেছে নিয়েছেন, তার প্রতি আপনার অবিচল আস্থা থাকা এবং সেই পথেই দৃঢ় প্রতিজ্ঞভাবে লেগে থাকা অত্যাবশ্যক। বারবার পথ পরিবর্তন কেবল সময় ও শক্তির অপচয় ঘটায়, এবং চূড়ায় আরোহণের স্বপ্ন অধরাই থেকে যায়।
আমরা প্রায়শই একটি 'নিখুঁত পরিকল্পনা'-এর অপেক্ষায় কালক্ষেপণ করি, যা রাতারাতি সাফল্য এনে দেবে। কিন্তু নিখুঁত পরিকল্পনা বলে কিছু নেই। যা বিদ্যমান তা হলো, আপনার বর্তমান পরিকল্পনার উপর দৃঢ় বিশ্বাস বা প্রত্যয়।
একটি সরল দৃষ্টান্তের মাধ্যমে বিষয়টি বিশদভাবে ব্যাখ্যা করা যায়: আপনি আপনার স্বাস্থ্যোন্নতি ঘটাতে ইচ্ছুক। যদিও আপনার এ বিষয়ে কোনো বিশেষ জ্ঞান নাও থাকতে পারে, সাধারণ বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগে আপনি অনুধাবন করতে পারেন যে, আপনাকে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ত্যাগ করতে হবে এবং শরীরচর্চা শুরু করতে হবে। যদি আপনি এই সাধারণ নির্দেশিকাটি আগামী তিন বছর ধরে নিষ্ঠার সাথে অনুসরণ করেন, তবে নিশ্চিতভাবেই আপনি অধিকাংশ মানুষের চেয়ে অনেক বেশি এগিয়ে থাকবেন, যারা তখনও 'সেরা ডায়েট প্ল্যান' বা 'ওয়ার্কআউট রুটিন'-এর সন্ধানে সময় ব্যয় করছে। আমাদের সমস্যা তথ্যের অপ্রাচুর্যতা নয়, বরং বাস্তবায়নের অভাব।
