মানুষ অস্থির। সারাক্ষণ কিছু না কিছু করতে চায়। স্ক্রল করতে চায়, বলতেই চায়, শুনতে চায়, পড়তে চায়, দেখতেই চায়। যেন চুপ করে বসে থাকাটা কোনো অপরাধ। যেন কিছু না করলেই সবকিছু ভেঙে পড়বে।
কিন্তু আমরা কি আদৌ জানি, কিসের পেছনে ছুটছি?
এই অস্থিরতা একধরনের ব্যথা- যেটা চুপচাপ বসে থাকলেই অনুভব করা যায়। আর আমরা সেটা এড়াতেই সারাক্ষণ ‘ব্যস্ত’ থাকি। কিন্তু আসলে কি ব্যস্ত? নাকি ভয় পেয়ে পালাচ্ছি?
যখন একা থাকি, তখন নিজেকে দেখতে হয়। নিজের শূন্যতা, নিজের ভেতরের গহ্বর, নিজের অপরিপূর্ণতা- এসব তখন আয়নার মতো সামনে চলে আসে।
আর এই দেখা- এই স্বরূপ-দর্শন- মানুষকে অস্থির করে তোলে।
আস্তে আস্তে আমরা এমন এক সমাজে পরিণত হয়েছি, যেখানে বেশি ব্যস্ত মানেই সফল,
আর চুপচাপ থাকা মানেই অলস।
কিন্তু যে মানুষ বসে বসে আকাশ দেখতে পারে, মাটির গন্ধ নিতে পারে, গাছের নীরবতা বুঝতে পারে- সে জানে শান্তি কী জিনিস।
সে জানে সময়কে থামিয়ে কীভাবে বুকে জড়াতে হয়।
আমরা অস্থির থাকি কারণ আমরা সময়ের গভীরে নামতে শিখিনি।
আমরা কেবল তার উপর দিয়ে হেঁটে যাই- দ্রুত, হাঁপাতে হাঁপাতে।
যদি কখনো থেমে দাঁড়াই, সময় তার স্তব্ধতা নিয়ে আমাদের ডাকে।
সে বলে- “এসো, একটু বাঁচো। একটু অনুভব করো। আমি কাঁটা ঘড়ির শব্দ নই, আমি তোমার জীবনের একেকটি অলৌকিক ক্ষণ।”
আর তখন হয়ত আমরা একটু বুঝি-
অস্থিরতা কোনো অভ্যাস নয়,
তা হলো ‘নিজের ভেতর থেকে পালানোর’ এক প্রাচীন অভ্যাস।
আর থেমে দাঁড়ানো মানে নিজের দিকে ফিরে যাওয়া।
নিজের, এবং আল্লাহর দিকে।
