সব কিছুর মাঝেও "পড়া" কেন সবচেয়ে গভীর অভিজ্ঞতা?



পৃথিবী এখন চোখের খোরাকের উপর দাঁড়িয়ে আছে। ভিডিও, অ্যানিমেশন, ভিজ্যুয়াল এফেক্ট- সবই যেন চিৎকার করে বলে, “আমাকে দেখো!”


কিন্তু তার মাঝেও, এক নিঃশব্দ রাজত্ব আছে। যেখানে কোনো ঝলকানি নেই, নেই কোনো ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক। শুধু তুমি, আর কিছু শব্দ।

আর সেই জায়গাটার নাম পড়ার জগৎ।


পড়ার সময় তুমি থেমে যাও। গভীরে নামো। তুমি আর তাড়াহুড়ো করো না।

তুমি শব্দ ধরে রাখো। তুমি ভাবো। তুমি একেকটা বাক্যের ভেতর দিয়ে হেঁটে যাও।


পড়ার সময় তুমি সৃষ্টি করো। লেখক শব্দ দিয়েছে, কিন্তু ছবি আঁকা তোমার কাজ। একই বাক্য, হাজার পাঠকের মনে হাজারটা চিত্র গড়ে তোলে।

ভিডিও বলে: "এটাই সত্য।" আর লেখা ফিসফিস করে: "তোমার সত্যটা কেমন?"


পড়ার সময় তুমি একা হয়ে ওঠো। একা, কিন্তু একাকিত্ব নয়।

তুমি নিজের সাথে থাকো। তোমার ভেতরের আলো-আঁধারি মুখোমুখি হয়।

তুমি প্রশ্ন করো। তুমি থেমে যাও। তুমি ভেতরে ঢুকে পড়ো- নিজেরই গভীরে।


লেখা কখনো তোমার মনোযোগ ছিনিয়ে নেয় না। বরং ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করে। যদি পড়ো, তাহলে বলে, "এসো। আমি আছি।"

এটাই তো ভালোবাসার মতো! চিৎকার করে নয়, বরং চুপচাপ অপেক্ষায় থেকে যায়।


এই পৃথিবীর যত জ্ঞান, যত অভিজ্ঞতা, যত আত্মা- সব সংরক্ষিত হয়ে আছে লেখায়। যা পড়ো, তা তুমি ধারণ করো। আর সেই ধারণ থেকেই তুমি রূপ নিতে থাকো।

তাই পড়া মানে শুধু জানানো নয়, পড়া মানে রূপান্তর।


ভিডিও দেখে তুমি হাঁসো। অডিও শুনে তুমি ভাবো। কিন্তু পড়া- 

তোমার ভেতরে কিছু ঘটিয়ে দেয়। তুমি বদলে যাও। তুমি একজন হয়ে ওঠো, যে আর আগের মতো নেই।



 

Previous Post Next Post